Monday, November 24, 2014

Sripur / Balagarh - boat making village and Terracotta temples

শ্রীপুরের শ্রী

Updated about a month ago
কাঠের ওপর খোদাই করা কাজের শতাব্দী প্রাচীন মন্দির ও নৌকা তৈরী করার কর্মশালা দেখতে হলে যেতে হবে হুগলী জেলার অন্যতম সুন্দর মন্দির প্রধান গ্রাম শ্রীপুরে | ইউরোপিয়ান ঔপনিবেশিকরা বাংলায় তাদের ব্যবসা ও শাষণকার্যের কেন্দ্র তৈরী করে বুঝেছিল যে এথানে কাজ করতে গেলে নৌ-পরিবহনের সাহায্য অপরিহার্য | নৌপথে তাদের ক্রমবর্ধমান ব্যবসাবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে রধুনন্দন মিত্র মুস্তাফি নামে এক ব্যক্তি অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে শ্রীপুরে গঙ্গার ধারে একটা পুরোপুরি নৌকা তৈরীর কারখানা স্থাপন করেন | মিত্রবাবু একটা ফোর্ট ও তার সাথে কাঠের ওপর খোদাই করা কাজের বেশ কিছু অপূর্ব মন্দিরও তৈরী করেন | ফোর্ট অনেকদিন আগেই ধ্বংশপ্রাপ্ত হয়ে গেছে কিন্তু কাঠের ওপর কাজ করা কিছু মন্দির এখনও অবশিষ্ট আছে |

শ্রীপুরের ভ্রমণ শুরু হয় রাস্তার ধারে অবস্থিত একটা ছোট্ট শিবমন্দির দিয়ে | একতলা এই মন্দিরের ভেতর একটা শিবলিঙ্গের মূর্তি রয়েছে | সামনেই রয়েছে একটা দোতলা দোলমঞ্চ | কাঠামোর মধ্যে পিলার ও সামনে ধনুকাকৃতি প্রবেশদ্বার পুরানো দিনের শ্রীপুরের ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দেয় | এর পরেই রয়েছে জোড়া শিবমন্দির | মন্দিরের দেওয়ালগুলো এক সময় টেরাকোটার কাজে সমৃদ্ধ ছিল কিন্তু বর্তমানে সিমেন্টের প্লাস্টার করার ফলে দেখতে অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে | কয়েক মিনিট হাঁটলেই পাওয়া যাবে একঝাঁক মন্দিরের দর্শণ | রয়েছে রাধাগোবিন্দের মন্দির | ভেতরে রয়েছে রাধাগোবিন্দ ও অন্যান্য দেব-দেবীর মূর্তি | সামনেই রয়েছে রাসমঞ্চ ও একটা নাটমন্দির | এখানকার মূল আকর্ষণ হচ্ছে চন্ডীমন্ডপ | মিত্র মুস্তাফির পরিবার এটা তৈরী করেন ১৭০৭ সালে ও বর্তমানে সংরক্ষিত মনুমেন্ট | দুঃখের বিষয় এটা যে খড়-তালপাতার তৈরী চন্ডীমন্ডপের ছাদ বর্তমানে ঢেউখেলানো টিন দিয়ে বদল করার ফলে মন্ডপের সৌন্দর্য ও মাধুর্য অনেকাংশে খর্ব হয়েছে | মন্ডপের ভেতর কিন্তু খুব সূক্ষ্ম কাঠের খোদাই করা প্যানেল এখনও রয়েছে | কাঠের তৈরী পিলার ও ছাদের বিমগুলোয় বিভিন্ন জ্যমিতিক আকার ও ফুল-লতাপাতার কাজ রয়েছে | মন্দির চত্বরে ৯টি চূড়ার অষ্টভুজী রাসমঞ্চ ও একটা নাটমন্দির দেখার মতন | মন্দিরের পর দেখা যেতে পারে নৌকা তৈরীর কারখানা | বর্তমানে যদিও ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকা তৈরী হয় কিন্তু তা কিভাবে তৈরী হয় তা দেখার মজাই আলাদা | বয়স্ক মানুষজনেরা বাংলায় নৌকা তৈরীর ইতিহাস সম্মন্ধে খুব সুন্দর সুন্দর গল্প বলেন যা শুনলে আনন্দ ও জ্ঞান দুইই লাভ করা যায় 

Source : The above information is from my good friend Asit Mukhopadhyay. To see pics click here

সুখরিয়ার সুখানুভুতি

Updated about a week ago
সুখরিয়া হুগলী জেলার সোমরাবাজার ও বলাগড় রেল স্টেশনের মধ্যে একটা সুন্দর গ্রাম যেখানে পুরানো দিনের সুন্দর কারুকার্য দেখা যায় | কিছু কিছু মন্দির নতুন করে তৈরী করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু আধুনিক কাঠামো পুরানো দিনের সৌন্দর্য হারিয়েছে| সুখরিয়ার পুরানো দিনের অনন্য সংস্কৃতি ও কারুশিল্প, পূর্বতন সমৃদ্ধ বাংলার দিকেই আলোকপাত করে |

পুরানো এক বটগাছের নীচে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে হুগলী নদী ও সবুজ দ্বীপের সৌন্দর্য | ১৭৮৫ সালে তৈরী হওয়া সমতল ছাদের সিদ্ধেশ্বরী মন্দির সুখারিয়ার সবথেকে পুরানো মন্দির | গ্রামের লোকেরা গর্বের সাথে মন্দিরটির পুননির্মানের কথা বলেন কিন্তু এক চূড়ার পাকা ছাদের সিমেন্টের প্লাস্টার করা থাম ও দেওয়ালের পুর্নগঠিত মন্দির তার শতাব্দী প্রচীন ইতিহাসকেই মুছে দিয়েছে | একই রাস্তায় পরবর্তী ও সম্ভবত সুখারিয়ার সবথেকে আকর্ষণীয় – আনন্দ ভৈরবী মন্দির | সামনের লেকের জলে অতিকায় মন্দির ও তার সাথে লাগোয়া ছোট ছোট মন্দিরের প্রতিফলন দর্শণার্থীদের মুগ্ধ করে দেয় | ২৫ চূড়ার তিনতলা আনন্দ ভৈরবী মন্দিরটি ১৮১৩ সালে বীরেশ্বর মুস্তাফি তৈরী করেন | প্রথম তলার চারদিকের চারটি কোণে ৩টি করে চূড়া রয়েছে, দ্বিতীয় তলার চারটি কোণে ২টি করে ও তৃতীয় তলায় একটি করে চূড়া রয়েছে! ঠিক মাঝখানে রয়েছে মন্দিরের মূল চূড়া | বিশেষজ্ঞদের মতে মন্দিরের স্থাপত্বশিল্পে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত ব্যতিক্রমী ও সারা পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৫টি মন্দির রয়েছে | মন্দিরের মধ্যে রয়েছে আনন্দময়ী কালীর বিগ্রহ ও ঢোকার পথের দুধারে ৬টি করে মন্দির রয়েছে যার মধ্যে ৫টি আটচালা ও একটি করে পঞ্চরত্ন| একটি পঞ্চরত্ন মন্দিরে গনেশ মূর্তি রয়েছে ও ৯টির মধ্যে শিবলিঙ্গ | মন্দিরগুলি মাঝে মধ্যেই সারাই ও মেরামত করা হয়েছে ফলে দৃষ্টিনন্দন কাজের বেশীরভাগটাই নষ্ট হয়ে গেছে | আনন্দ ভৈরবী মন্দিরের পরই রয়েছে রাধা কুঞ্জ | এটা মুস্তাফি পরিবারের বংশানুক্রমিক প্রসাদ যা বর্তমানে ধ্বংশস্তুপ কিন্তু প্রতিবছর এখানেই তাদের পারিবারিক দূর্গাপুজা হয় | এর পর রয়েছে হারা সুন্দরী মন্দির | এই নবরত্ন মন্দির তৈরী হয় ১৮১৩ সালে ও গড়ন আনন্দ ভৈরবী মন্দিরের মতই, শুধু ঢোকার পথের দুধারে রয়েছে পাঁচটি আটচালা ও দুটি করে নবরত্ন মন্দির | এই মন্দিরগুলোও অনেকবার সারাই ও মেরামত করা হয়েছে | এর পর রয়েছে নিস্তারিনী মন্দির| মুস্তাফি পরিবার এটা তৈরী করেন ১৮৪৭ সালে | এই নবরত্ন মন্দিরে গম্বুজাকৃতি চূড়া রয়েছে | আগে মন্দির চত্বরে একটা নাটমন্দির ছিল বর্তমানে তা ধ্বংশস্তুপ শুধুমাত্র চারটি পিলার অবশিষ্ট রয়েছে | সামনেই রয়েছে মুস্তাফি পরিবারের ঠাকুর দালান যার অবস্থাও নাটমন্দিরের মতই শুধুমাত্র কিছু পিলার ও আর্চ পুরানো ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে | 
Source : The above information is from my good friend Asit Mukhopadhyay. To see pics click here

Baidyapur - unique Terracotta temples near Kalna

বৈদ্যপুর - আমার জন্মভূমি

Updated on Saturday
বৈদ্যপুর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কালনা সাব-ডিভিসানের অন্তর্গত একটা ছোট্ট মিষ্টি গ্রাম। গ্রামটি ছোট্ট হলেও তার পুরানো বেশ কিছু সুন্দর ঐতিহ্যপূর্ণ টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ মন্দিরের জন্যে খুবই গর্বিত। কালের তীব্র আক্রমণ ও মানুষের চুড়ান্ত উদাসীনতা এই দুইয়ের মিলিত সমীকরণে বেশিরভাগ টেরাকোটার কাজ আজ ধ্বংশপ্রাপ্ত হয়েছে এবং বাকি মন্দিরগুলোও ধ্বংশপ্রাপ্তির মুখে। তবু এখনও যা দেখা যায় তা সত্যি সত্যিই বিস্ময়কর। মূল মন্দিরগুলির বিবরণ নীচে দেওয়া হ’ল।

জোড়া দেউলঃ- ১৫৫০ সালে শুভানন্দ পালের তৈরী জোড়া দেউল যা বর্তমানে ভারতের প্রত্নতাত্বিক সংস্থা দ্বারা সংরক্ষিত। দেউলের সদরের বহির্ভাগে রয়েছে ইঁটের কাজ। বড় মন্দিরটি পূর্বমুখী ও ছোটটি উত্তরমুখী। দুটো মন্দিরই একটা রাস্তা দিয়ে সংযুক্ত। মন্দিরের দেওয়াল সূক্ষ্ম টেরাকোটার কাজ দিয়ে অলংকৃত যেখানে সামাজিক চিত্র ও হিন্দু মহাকাব্যের বিভিন্ন কাহিনী রয়েছে।
জোড়া শিব মন্দিরঃ- বাংলার স্বতন্ত্র মন্দির স্থাপত্যশিল্প - নবরত্ন ও আটচালার এক সুন্দর মিশ্রণ পাওয়া যাবে এই মন্দিরগুলিতে। বড় মন্দিরটি নবরত্ল ও ছোটটি আটচালা। দুটি মন্দিরই সুন্দর টেরাকোটার কাজে সমৃদ্ধ কিন্তু তাদের অবস্থা খুবই খারাপ ও জরুরি ভিত্তিতে এদের সংস্কার দরকার।
বুড়ে শিব মন্দিরঃ- মন্দিরটি সবথেকে বেশী অবহেলিত। সুন্দর টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ দেওয়াল বর্তমানে সিমেন্টের প্লাস্টার করা সাধারণ দেওয়ালে পরিনত হয়েছে কিন্তু সামান্য কিছু কাজ যা এখনও রয়ে গেছে যেখানে রামায়ন ও কৃষ্ণলীলার কাহিনী বিবৃত তা আজও অম্লান।
রাজরাজেশ্বর মন্দিরঃ- জমিদার বাড়ীর ভেতরে ছোট্ট কিন্তু বৈদ্যপুরের অন্যতম প্রধান বিষ্ণু বা নারায়ন মন্দির। মন্দিরের বিগ্রহ নারায়ন শিলা। একটা দুর্লভ ধরনের পাথরের তৈরী যেখানে সাতটি গর্তের মধ্যে সাতটি খাজকাটা চক্র রয়েছে যার নাম রাজ রাজেশ্বর চক্র।
এ ছাড়াও রয়েছে বৃন্দাবন চন্দ্র মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, রাসমঞ্চ ও অজস্র পুরানে রাজবাড়ী।

সর্বোপরি এই গ্রামের প্রতি আমার ব্যক্তিগত দুর্বলতা রয়েছে কারণ এই মিষ্টি গ্রাম আমার জন্মস্থান। আমার শৈশব কেটেছে এখানকার আমগাছ-জামগাছ, নিমতলা-বেলতলা, তালপুকুর-ঠাকুরপুকুর, রথতলা-রাসতলা, দোল, রাস, জগদ্ধাত্রী পুজো ইত্যাদির রস আস্বাদনে। সঙ্গে রয়েছে আমার অনেক ভাই-দাদা যাদের সঙ্গে ভালবাসার মোড়কে ছোটবেলার সুখ, দুঃখ, কান্না, হাঁসি, দুষ্টুমি ইত্যাদির অনেক ইতিহাস।


Source : The above information is from my good friend Asit Mukhopadhyay. To see the pictures click here

Chronological order

Followers